অশ্লীলতা ছড়িয়ে বাংলাদেশি ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে দেড় বছরে ১০৮ কোটি টাকা হাতিয়েছে ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ বিগো। এর মধ্যে ৭৯ কোটি টাকা সিঙ্গাপুরে পাচার করা হয়েছে। গত বছর বিগো টেকনোলজির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) চীনা নাগরিক ইয়াও জিসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের পর অর্থপাচারের অনুসন্ধানে এই তথ্য পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
এ নিয়ে গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পল্টন থানায় অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনে একটি মামলা করে সিআইডি।
এতে চীনা নাগরিক ইয়াও জি ছাড়া বিগো বাংলা লিমিটেড, প্রতিষ্ঠানটির কর্মী এস এম নাজমুল হক, আরিফ হোসেন এবং মুনসুন হোল্ডিং নামের অন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে আসামি করা হয়। মামলায় অভিযোগ করা হয়, বিগোর এমডি অন্য আসামিদের সহায়তায় ৭৯ কোটি টাকা পাচার করেছেন।
অর্থপাচার মামলার বাদী ও সিআইডির উপপরিদর্শক সোহেল রানা বলেন, ‘মানি লন্ডারিং মামলা করার আগে নিয়ম অনুযায়ী অনুসন্ধান করি। অনুসন্ধানে বিগোর অর্থপাচারের তথ্য মিলেছে। ’
সিআইডি জানায়, অ্যাপে নারীদের নগ্ন উপস্থাপন করে বিভিন্ন অফার দিয়ে ভার্চুয়াল মুদ্রায় টাকা নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে এমএফএস ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহারের পর সব শেষে সূর্য পে নামের পেমেন্ট গেটওয়ে সার্ভিস ব্যবহার করা হয়।
এর আগে গত বছরের জুন মাসে পল্টন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে করা একটি মামলায় ইয়াও জিসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। অন্য চারজন হলেন বিগো বাংলার কর্মী মোস্তাফা সাইফ রেজা, আরিফ হোসেন, এস এম নাজমুল হক এবং আসমা উল হুসনা সেজুতী। তাঁরা এখন জেলহাজতে।
অর্থপাচার মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের জুলাই পর্যন্ত ভার্চুয়াল ডায়মন্ড ও বিনস বিক্রির বিপরীতে অ্যাপটির বাংলাদেশি ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে এক কোটি ২৬ লাখ ৮০ হাজার ৮০৬ টাকা আয় করে বিগো। এ অর্থ জমা হয় একটি বেসরকারি ব্যাংকের গাজীপুর শাখায়, যা বর্তমানে আদালতের নির্দেশে ফ্রিজ করে রাখা হয়েছে। ওই ব্যাংক হিসাবে স্থিতি রয়েছে এক লাখ ৩৪ হাজার ৪৭০ টাকা। বাকি এক কোটি ২৫ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩৬ টাকা বিনস রিসেলার নাজমুল হক দেন চীনা নাগরিক ইয়াও জিকে। একই সময়ের মধ্যে আরো দুটি বেসরকারি ব্যাংকের হিসাবের মাধ্যমে বিগো বাংলা লিমিটেড ৪৩ কোটি ৫০ লাখ ৫০ হাজার ৭৬ টাকা সংগ্রহ করে।
এ ছাড়া ডায়মন্ড ও বিনস রিসেলার এস এম নাজমুল হকের ১২টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৪৭ কোটি আট লাখ ১০ হাজার ৮১২ টাকা সংগ্রহ করে বিগো বাংলা লিমিটেড। ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের ক্ষেত্রে পেমেন্ট গেটওয়ে সুবিধাও নেয় প্রতিষ্ঠানটি। এ ক্ষেত্রে তাদের সূর্য পে নামের সূর্যমুখী লিমিটেডের পেমেন্ট গেটওয়ে পাইয়ে দেয় দেশি প্রতিষ্ঠান মুনসুন হোল্ডিং লিমিটেড।